মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে রাজধানী ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া রজনী খাতুনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ৯টায় জানাজা শেষে ১০টায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামে তার দাফন হয়।
নিহত রজনী মেহেরপুরের গাংনীর মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাওট গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে ও দৌলতপুরের হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের জহিরুল ইসলামের স্ত্রী।
এদিন সকালে নিহতের মরদেহ সাদিপুরে পৌঁছালে সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। সংবাদ পেয়ে নিকট আত্মীয়সহ এলাকাবাসী সেখানে ছুটে আসেন। পরে জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। নিহতের জানাজায় দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকীসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসী ও তার স্বজনরা জানান, জহিরুল ইসলাম ব্যবসায়িক সূত্রে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। বড় ছেলে রোবাই ইসলাম এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মেজো ছেলে রোহান ইসলাম মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণি ও মেয়ে জুমজুম ইসলাম একই স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের দুজনকেই বাসা থেকে স্কুলে আনা নেওয়া করতেন তাদের মা রজনী খাতুন। রোহান অসুস্থ থাকায় দুর্ঘটনার দিন তিনি স্কুলে যাননি।
তার স্বজনরা আরো জানান, সকালে মেয়ে জুমজুমকে স্কুলে রেখে গিয়েছিলেন এবং ছুটির আগে মেয়েকে আনতে স্কুলে যান মা রজনী খাতুন। বিমান বিধ্বংস হওয়ার পর শিশু কন্যাকে বাঁচাতে শ্রেণিকক্ষের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তার আগেই তার মেয়ে স্কুলের বাইরে বের হয়ে যায়। এতে শিশুটি রক্ষা পেলেও অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকার সিএমএস হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান রজনী। রজনী ভেবেছিলেন তার বাচ্চা শ্রেণিকক্ষেই রয়েছে। মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।
দুর্ঘটনার দিন স্কুলে অবস্থান করা মেয়ে জুমজুম ইসলাম বলেন, রোহান ভাইয়া সেদিন বিদ্যালয়ে যায়নি। প্রতিদিনের মতো মা তাকে সকালে বিদ্যালয়ে রেখে যান। মা তাকে খুঁজতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন। তবে তার কোনও সমস্যা হয়নি। সন্ধ্যায় মায়ের মৃত্যুর কথা জানতে পারি।
নিহতের স্বজন গিয়াস উদ্দীন জানান, বিমান দুর্ঘটনার খবর পাই সোমবার দুপুরেই। পরে ছেলে-মেয়েদের সন্ধান পাওয়া গেলেও রজনীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার দিকে খবর আসে বাচ্চা অক্ষত থাকলেও রজনী মারা গেছেন। রজনীর মাথার পেছনের দিকে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে শরীর অক্ষত ছিল।
আমারবাঙলা/জিজি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            