জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণপ্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে রাজধানীতে নির্মিত হচ্ছে ‘গণমিনার’। বীরউত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান ও বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরে এই মিনার নির্মাণ করা হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে গণমানুষের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে গণচাঁদা সংগ্রহেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই উদ্যোগের কথা জানান গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘৫ আগস্টের জয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করেছে। এই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জন, আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের স্মরণেই নির্মাণ করা হবে এই গণমিনার। এটি নির্মাণে গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণচাঁদা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।’
মিনার নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ আজম বলেন, আমরা ৫ আগস্টের মধ্যে এর একটি দৃশ্যমান রূপ দিতে চাই। তবে পূর্ণাঙ্গ নির্মাণকাজ চলতে থাকবে।
নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমন বলেন, ‘লাখো মানুষের অংশগ্রহণে এবং হাজার হাজার শহীদের আত্মত্যাগে সংঘটিত এই অভ্যুত্থানকে আমরা স্মরণে রাখতে চাই মিনার নির্মাণের মাধ্যমে। মিনার একটি পাবলিক প্লেস, যেখানে সম্মান প্রদর্শন করা যায়; এটি জাদুঘরের মতো বদ্ধ নয়। প্রস্তাবিত মিনারটি মূলত দুটি উপাদানে গঠিত হবে–একটি দেয়াল এবং একটি এপিটাফ। এপিটাফে জাতিসংঘ স্বীকৃত ১ হাজার ৪০০ শহীদের নাম, জন্ম-মৃত্যুর সময়, পেশা এবং শহীদ হওয়ার স্থানের তথ্য খোদাই করে সংরক্ষণ করা হবে।’
জানা গেছে, গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে– ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জমি বরাদ্দ ও প্রকৌশল সহায়তার আশ্বাস, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিচিতি সংরক্ষণ এবং গত ২৫০ বছরের গণপ্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাস চিত্র ও খোদাইয়ের মাধ্যমে এই স্মারকে তুলে ধরা। কমিটি জানিয়েছে, এই গণমিনার হবে একটি সর্বজনীন স্মরণস্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সব মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগে নির্মিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম, লেখক মোহাম্মদ রোমেল প্রমুখ।
আমারবাঙলা/জিজি