ছবি: সংগৃহীত
সারাদেশ

শীতল পাটির ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে; পেশা বদলে নিচ্ছেন কারিগররা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ধুলিজোড়া গ্রামে একসময় শীতল পাটির ব্যাপক কদর ছিল। কারুশিল্পীদের হাতে তৈরি এই শীতল পাটি শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, দেশ–বিদেশেও ছিল সমাদৃত। তবে স্বল্পমূল্যের প্লাস্টিকের মাদুর বাজার দখল করায় হারাতে বসেছে শীতল পাটির সেই প্রাচীন ঐতিহ্য। আয় কমে যাওয়ায় ধুলিজোড়া গ্রামের শতাধিক কারিগর বাধ্য হয়ে বাপ–দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।

রাজনগর–বালাগঞ্জ খেয়াঘাট সড়কের পাশের নিরিবিলি এই গ্রামই একসময় শীতল পাটির উৎপাদনে ছিল দেশের অন্যতম পরিচিত নাম। বিভিন্ন নকশা ও কারুকার্যখচিত পাটি তৈরিতে এই গ্রামের খ্যাতি ছড়িয়ে ছিল দেশজুড়ে।

বুধবার ধুলিজোড়া গ্রামের কারিগর অরুণ চন্দ্র দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির উঠানে তৈরি করা কারুকার্যময় শীতল পাটি রৌদ্রে শুকানো হচ্ছে। বারান্দায় রাখা আছে ভাঁজ করা একটি পাটি; আরও দুটি মাদুর তৈরি করে রাখা হয়েছে। অরুণ চন্দ্র দাস জানান, ৪–৫ হাত বিশিষ্ট একটি কারুকাজ করা শীতল পাটি বানাতে ৩০–৩৫ দিন সময় লাগে। এতে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার বেত ও রং লাগে। পালঙ্কের জন্য তৈরি ‘নঙা’ করা একটি পাটির দাম পড়ে ২৮–৩০ হাজার টাকা। এসব পাটি সাধারণত শৌখিন ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ব্যবহার করেন। আর সাধারণ মানের একটি পাটি ৫–৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি বলেন, “আগে বিয়ে–শাদি কিংবা গরমের মৌসুমে শীতল পাটির ব্যপক চাহিদা ছিল। এখন সস্তা চায়না প্রযুক্তির প্লাস্টিকের মাদুর বাজার দখল করায় শীতল পাটি আর আগের মতো বিক্রি হয় না।”

অরুণ চন্দ্র দাস আরও জানান, সরকারি সহযোগিতায় তিনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে জাপানে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলায় অংশ নেন এবং ২০২৩ সালে যান চীনে। উভয় দেশেই ধুলিজোড়ার তৈরি শীতল পাটি প্রদর্শন ও বিক্রি হয়েছে। ‘নঙা’ আঁকা শীতল পাটি চীন ও জাপানে দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এসব প্রদর্শনীতে তাঁর সঙ্গে হরেন্দ্র দাস ও গীতেশ দাসও অংশ নেন।

গ্রামের কারিগর প্রমেশ দাস, দ্বিজেন্দ্র দাস, শৈতেন্দ্র দাস, গোপাল দাস, সুশীল দাস ও গোবিন্দ দাসসহ আরও অনেকে জানান, প্লাস্টিকের সস্তা মাদুরের কারণে শীতল পাটির বিক্রি আগের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না। ফলে আয় কমে যাওয়ায় অনেকেই ঐতিহ্যবাহী এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজে যুক্ত হচ্ছেন।

তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,ডিজিটাল যুগের দ্রুত পরিবর্তনের বাতাসে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের পূর্বপুরুষের গড়া শীতল পাটির ঐতিহ্য।

আমারবাঙলা/এসএ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

১৯২ টি বিল অস্তিত্ববিহীন 

এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি হাকালুকি হাওর। এছাড়া বৃহৎ দুটি হাওর হ...

মৌলভীবাজারে শতকোটি ঘনফুট গ্যাসের মজুত

চায়ের রাজ্য হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজার এবার গ্যাসসম্পদেও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখ...

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে অস্ত্র–গুলিসহ যুবক আটক

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ আরিফুল ইসলাম (২৪) নামের...

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জুয়েলের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ...

হাওর ও নদীর মাছ বাজারে আনতেই উধাও

শীতের সকাল। লালচে আলোয় চারপাশ তখনো রঙিন। সারারাত হাওর–নদীতে মাছ ধরে ভোর...

শীতল পাটির ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে; পেশা বদলে নিচ্ছেন কারিগররা

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ধুলিজোড়া গ্রামে একসময় শীতল পাটির ব্যাপক কদর ছিল।...

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫ জন, নতুন ভর্তি ৪৯০

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন ক...

নির্বাচনে ভুয়া সাংবাদিক শনাক্তে থাকছে কিউআর ব্যবস্থা: ইসি সানাউল্লাহ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভুয়া সাংবাদিক শনাক্তে কিউআর কোড ব্যবস্থা থাকবে ব...

৮ কুকুর ছানা হত্যার ঘটনায় মামলা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৮টি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দী করে পুকুরে ডুবি...

বিপিএল শুরু ২৬ ডিসেম্বর, ফাইনাল ২৩ জানুয়ারি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসরের চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করেছে বিসি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা