এক সময়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আর কাশফুলের জন্য পরিচিত ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকা এখন যেন এক 'লাশ-ফেলারি' গোপন ডেরা হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকা থেকে প্রায় নিয়মিতভাবে নিখোঁজ বা অজ্ঞাতনামা মানুষের মরদেহ উদ্ধার হচ্ছে, যা স্থানীয় জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
বিশেষ করে কিশোর ও তরুণদের গলাকাটা বা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনাগুলো এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানেও এখান থেকে একাধিক কিশোরের গলাকাটা ও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে কিছু হত্যাকাণ্ড ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছে।
সর্বশেষ ঘটনা গত ১৭ নভেম্বর এক কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পরদিন ১৮ নভেম্বর লেক থেকে আরেক নিখোঁজ কিশোরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে দিয়াবাড়ি এখন অপরাধীদের জন্য একটি 'সেফ জোন' হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মেট্রোরেলসহ আধুনিক স্থাপনার ছোঁয়া লাগার পরেও কেন এই এলাকায় অপরাধীরা এত সহজে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে লাশ ফেলে যেতে পারছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এলাকাবাসীর দাবি, নির্জনতা এবং পর্যাপ্ত আলোর অভাব অপরাধীদের সুযোগ করে দিচ্ছে।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, তারা উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত এবং জড়িত অপরাধীদের ধরতে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। সম্প্রতি একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এলাকাবাসী এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রবণতা থামাতে হলে দিয়াবাড়ি এলাকার নজরদারি জোরদার করা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা এবং রাতের বেলা নিয়মিত টহল বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায়, এই মনোরম এলাকাটি এক ভীতিকর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবে।
আমারবাঙলা/এফএইচ