ঢাকাই চলচ্চিত্রের মহানায়ক বুলবুল আহমেদের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১০ সালের এই দিনে ভক্তদের কাঁদিয়ে চিরতরে চলে গিয়েছিলেন তিনি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন প্রায় ৩০০ নাটক এবং দুই শতাধিকের বেশি চলচ্চিত্রে। প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন চলচ্চিত্র নির্মাণেও।
‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘সূর্য কন্যা’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘রূপালী সৈকতে’, ‘দেবদাস’, ‘দিপু নাম্বার টু’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘কলমিলতা’, ‘মহানায়ক’, ‘দহন’, ‘এখনও অনেক রাত’, ‘শুভদা’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘দুই জীবন’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘দুই নয়নের আলো’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন এই অভিনেতা।
অভিনয় জগতে থিতু হওয়ার আগে তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছিলেন বুলবুল আহমেদ। শাখা প্রধান হিসেবে চাকরি করেছেন টানা ১০ বছর। তবে সেখানে তাঁর মন বসেনি। শেষমেশ ব্যাংকিং পেশা ছেড়ে দিয়ে অভিনয়ে নেমে পড়েন পুরোদমে।
বুলবুল আহমেদের ভাষ্য মতে, চাকরি ছেড়ে সেসময় অভিনয়ে তাঁর নাম লেখানো ছিল রীতিমতো জীবন নিয়ে জুয়া খেলা! এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় বন্ধু-বান্ধবরা মিলে ‘জীবন নিয়ে জুয়া’ নামের একটি ছবি বানিয়েছিল, যেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন। বুলবুল আহমেদের মতে, সেই সিনেমাই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। যদিও সেটি আলোর মুখ দেখেনি। কিন্তু সেই সিনেমাটির পরই চাকরি ছেড়ে পুরোমাত্রায় অভিনয়ে সময় দেন তিনি। এ অভিনেতার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল ইউসুফ জহির পরিচালিত ‘ইয়ে করে বিয়ে’। এরপর একের পর এক চলচ্চিত্রে বাজিমাত করেছেন তিনি। বিশেষ করে ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে জায়গা করে নেন সব শ্রেণির দর্শকের হৃদয়ে।
১৯৩৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার আগামসি লেনে জন্মগ্রহণ করেন বুলবুল আহমেদ। তাঁর আসল নাম তাবাররুক আহমেদ। বাবা-মা তাঁকে ‘বুলবুল’ বলে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী। পড়েছেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুলে। সেখান থেকে এসএসসি পাস করে নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। পড়েছেন সিলেটের এমসি কলেজেও। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করে ১৯৬৫ সালে ব্যাংকের চাকরিতে যোগ দেন।
আমারবাঙলা/জিজি