চট্টগ্রাম সিটির সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্পের প্রাক্কলন চলছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি জানান, বর্তমানে ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই ৪০ থেকে ৫০টি সড়ক, ফুটওভারব্রিজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হবে। মেয়র বলেন, ‘আমি নগরে কোনো ভাঙা সড়ক দেখতে চাই না।’
গতকাল সোমবার টাইগারপাসে চসিক নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রকৌশল বিভাগের সমন্বয়সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অগ্রাধিকার
সভা শেষে আজাদীকে মেয়র জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুলশীসহ যেসব এলাকায় রেললাইন সড়কের ওপর দিয়ে গেছে, সেখানে ওভারপাস নির্মাণে ডিপিপি (প্রকল্প প্রস্তাব) প্রস্তুত করা হবে। ভূমিকম্পঝুঁকিতে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ভবনগুলো নতুন করে নির্মাণে আলাদা ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে। পাশাপাশি ভাঙা সড়ক সংস্কারেও পৃথক প্রস্তাব করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত প্রকৌশলীরা জানান, দেওয়ানহাট ব্রিজের পুর্ননির্মাণ বা বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। ব্রিজটি পুরোনো হওয়ায় ট্রাফিক ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিদিন কত গাড়ি ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করে তার ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। মেয়র এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
ওয়াসার কাটাকাটি নিয়ে ক্ষোভ
ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কারণে শহরের বিভিন্ন সড়ক কাটাকাটি করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় সভায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘অতীতে সমন্বয়হীনতার কারণে চসিকের নতুন বানানো অনেক সড়ক ওয়াসা কেটে ফেলেছে। এভাবে চলতে দেওয়া যাবে না।’
মেয়র নির্দেশ দেন, কোন এলাকায় ওয়াসা সড়ক কাটবে তা আগেই জেনে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে কোতোয়ালী এলাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হঠাৎ কাটাকাটি করে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়।
পিডিবির বিদ্যুৎ পোলেও প্রতিবন্ধকতা
প্রকৌশলীরা জানান, পিডিবির বিদ্যুৎ পোল ও বৈদ্যুতিক লাইনের কারণে অনেক জায়গায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ ও সড়কে চলাচলে বাধা তৈরি হচ্ছে। মেয়র দ্রুত পিডিবির সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দেন।
মাঠ সংস্কারে নতুন পরিকল্পনা
ডা. শাহাদাত জানান, মহসিন কলেজ মাঠের আদলে শহরের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠও সংস্কার করা হবে। তিনি বলেন, ‘৪১টি ওয়ার্ডে ৪১টি মাঠ করার প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১১টির উন্নয়নকাজ ইতিমধ্যে চলছে।’ চট্টগ্রাম কলেজের প্যারেড মাঠসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পতিত জমি জনকল্যাণে ব্যবহারের জন্য উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাহী প্রকৌশলীরা।
আমারবাঙলা/এনইউআ