কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে ‘চলন্ত বাসে’ ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন– মো. হোসেন আলী (২৫) ও মো. আলী হোসেন (২৩)।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় তিনজন পলাতক রয়েছে। তারা হলেন– পিচ্চি রাসেল, নূর আলম ও সৌরভ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ওই ছাত্রী ঢাকায় যেতে কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে 'স্বাধীন সেন্টমার্টিন পরিবহনে' ওঠেন। বাসটি পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে ইউটার্ন নেওয়ার কথা বলা থাকলেও ওই ছাত্রীকে নিয়ে চৌদ্দগ্রামের দিকে চলে যায়। এরপর সুয়াগাজী এলাকা থেকে আবার পদুয়ার বাজারে ফিরে আসে। তখন বাসে ছিল চালক ও হেল্পারসহ পাঁচজন। তারা বাসে একা পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ধরে গহনা ও টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেন। এক পর্যায়ে তারা ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী বলেন, ‘হাত-পা বেঁধে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বাস থেকে ফেলে দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখানে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আছেন, তিনি অপরাধীদের দুই বছরের অজামিনযোগ্য জেল দিয়েছেন। এছাড়া পুলিশ ঘোষণা দিয়েছে, তারা এক মাসের মধ্যে মামলার অভিযোগ জমা দেবে।’
সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব তালুকদার বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা দেখে ও শুনে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিষয়ে অভিযোগ দিলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
সজিব তালুকদার বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজন অপরাধ স্বীকার করেছেন। তারা যেহেতু যৌন নিপীড়নের সময় বল প্রয়োগ করেছিল, তারা সুযোগ পেলে ধর্ষণ করত। তবে তারা সেটি পারেনি।’
কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ‘পলাতক তিনজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করি, পুলিশ প্রশাসনের কোনো গাফিলতি থাকবে না।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত পাঁচজন ওই ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করলে তা স্থানীয় এক ব্যক্তি দেখে ফেলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খবর দেন। পরে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন৷
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ আসে। শিক্ষার্থীরা বাস মালিক এবং অভিযুক্ত বাকি দুজনকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার দাবি জানান।
পুলিশ শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানালে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবি না মানায় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযুক্তদের দুই বছর কারাদণ্ড দেয়।
আমারবাঙলা/এফএইচ