অনলাইনে কিছু খোঁজার প্রয়োজন হলে প্রথমেই যেটি মাথায় আসে, তা হলো গুগল সার্চ। ঘুম থেকে জেগে রাতের ঘুম যাওয়ার আগপর্যন্ত অনেকবার গুগল ব্যবহার করা হয় আমাদের। তবে এখন থেকে যে কোনো কিছু হুট করে সার্চ করলেই বিপদ হতে পারে। কারণ, গুগল এখন কনটেন্ট সার্চে আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর।
বিশ্বজুড়ে অনেক ব্যবহারকারীর গুগল অ্যাকাউন্ট বন্ধ বা সাময়িক স্থগিত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে—ঠিক কী কারণে এমনটা হচ্ছে?
গুগলের কড়াকড়ির পেছনে কী কারণ?
গুগল এখন তার নীতিমালা বাস্তবায়নে অনেক কঠোর। অশালীন বা বেআইনি কোনো কিছু খোঁজ করা, স্প্যাম পাঠানো বা অনৈতিক কনটেন্টে জড়িত থাকার অভিযোগে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার নজির বাড়ছে।
গুগলের নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, যেকোনো কিছু নিয়ে কৌতূহল হলেই তা সার্চ করা ঠিক নয়। বিশেষ করে স্প্যাম, ম্যালওয়্যার, জালিয়াতি বা নীতিবিরুদ্ধ কোনো বিষয় সার্চ করলেই ব্যবহারকারী পড়তে পারেন জটিলতায়।
স্প্যাম সার্চ মানেই বাড়তি ঝুঁকি
গুগল স্প্যাম জাতীয় সার্চ একেবারেই বরদাস্ত করে না। যেমন—অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল পাঠানো, বিতর্কিত মন্তব্য করা বা বারবার একই বিষয়ে সার্চ করা। কেউ যদি স্প্যাম-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে জড়িত হন, তাহলে তার অ্যাকাউন্টের রিচ কমে যেতে পারে বা গুগল সেই অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করতে পারে।
ম্যালওয়্যার সার্চে জিরো টলারেন্স
গুগল ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার সম্পর্কিত কোনো কিছুকে অনুমোদন করে না। যেমন—ভাইরাস, ট্রোজান হর্স বা হ্যাকিং টুল। ভুলবশত এসব বিষয়ে সার্চ করা বা সন্দেহজনক লিংক ডাউনলোড করে ফেলার পরিণতিতে অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধও হয়ে যেতে পারে।
এমনকি, এসব ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। গুগলের নীতিমালায় ম্যালওয়্যারুসংক্রান্ত তৎপরতা এক ধরনের সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
জালিয়াতিমূলক কার্যক্রমে কড়া নজরদারি
গুগল স্পষ্ট করে বলেছে—কোনো রকম প্রতারণা বা জালিয়াতি সহ্য করা হবে না। ফিশিং, জাল রিভিউ, ভুয়া অফার ইত্যাদি যদি কেউ সার্চ করেন বা এর সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাহলে এখনই সতর্ক হওয়া উচিত। এতে শুধু অ্যাকাউন্ট হারানোর ঝুঁকিই নয়, ভবিষ্যতে অন্যান্য গুগল সেবা ব্যবহারেও জটিলতা দেখা দিতে পারে।
নীতিমালা ভাঙলেই শাস্তি
যেসব বিষয় গুগলের কমিউনিটি গাইডলাইনের আওতায় পড়ে—যেমন অশালীন কনটেন্ট, ঘৃণামূলক ভাষা, জাতিগত বৈষম্যমূলক বক্তব্য, অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ—এগুলো লঙ্ঘন করলে প্রথমে অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। পরে প্রয়োজনে আর্থিক জরিমানাও হতে পারে।
গুগল কর্তৃপক্ষ চাইলে চূড়ান্তভাবে ওই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করতে পারে। তাই আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি সাবধান হয়ে গুগল সার্চ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজকের দিনে ইন্টারনেট ব্যবহার যেমন জরুরি, তেমনি সচেতন থাকাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুগলের সার্চ ইঞ্জিনে কিছু খোঁজার আগে একটু ভেবে নেওয়াই এখন সবচেয়ে নিরাপদ পথ।
আমারবাঙলা/এফএইচ