যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সোমবার (২১ জুলাই) মার্কিন ফক্স নিউজ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, ক্ষতির কারণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে, তবে এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার কথা ভাবা হচ্ছে না। এই প্রযুক্তি ইরানের বিজ্ঞানীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন এবং জাতীয় গর্বের প্রতীক, যা তারা ছাড়তে রাজি নয়। ভবিষ্যতের যেকোনো পারমাণবিক চুক্তিতেও এই অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখার বিষয় তিনি জোর দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর ইউরেনিয়াম মজুদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তার কাছে বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও, বিষয়টি ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা মূল্যায়ন করছে বলেও জানান আরাগচি। তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কোনো আমদানি নয়, যা একক হামলায় শেষ হয়ে যাবে, তারা এখনও তাদের সক্ষমতা বজায় রেখেছে।
গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার মধ্যে তেহরানের দক্ষিণে ফর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র অন্যতম। এই হামলা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের অংশ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলায় তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।
এর বিপরীতে আরাগচি বলছেন, পারমাণবিক ইস্যুতে সামরিক শক্তি প্রয়োগ নয়, কূটনৈতিক সমাধানই একমাত্র পথ। তিনি আরও জানান, শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইরান পারমাণবিক বিষয়ক নতুন আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনার দরজা বন্ধ করিনি, তবে এখনই সরাসরি আলোচনা সম্ভব নয়।’
আরাগচির এসব বক্তব্যের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আবারও হামলা চালাবো—আমি আগেও বলেছি।’
আমারবাঙলা/এফএইচ