নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের জনগণের ভোটের আশা করে না এবং বাংলাদেশের জনগণের ভোটের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস তাদের নেই। পাশ্ববর্তী সরকারের ক্ষমতার জোরে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে। তারা ভারতের কাছে দাসখত দিয়ে ক্ষমতায় থাকছে। আওয়ামী লীগের কাছে স্বাধীন বাংলাদেশকেও এখন ডামি রাষ্ট্র মনে হয়। বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য তারা পুরো দেশটাকেই ডামি রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ, গণতন্ত্র হত্যা এবং বিনা ভোটে অবৈধ ক্ষমতার অমরত্ব লাভের অপচেষ্টায় প্রতিবেশী ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদের স্বীকারোক্তি প্রদান করে জোর গলায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। কথায় কথায় প্রায় সব মন্ত্রী ভারত বন্দনায় মত্ত হচ্ছেন। তাদের কথাবার্তা ও আচার—আচরণে মনে হচ্ছে—বাংলাদেশ এখন ভারতের স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়, ক্ষমতার উৎস ভারত। ভারতই সরাসরি তাদেরকে পৃষ্টপোষকতা দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে রেখে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। বাংলাদেশের জনগণের অধিকার তছনছ করছে।
গত ১৫ জানুয়ারি সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন নিয়োগ ও প্রার্থিতায় ভারত হস্তক্ষেপ করে আসছে বলেও জানান রিজভী।
তিনি বলেন, এতদিন আমরা শুনেছি, বিভিন্ন মানুষ বলে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান, বিডিআর প্রধান, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের প্রধান কে হবেন—সেটি নিয়ে নাকি ভারতের সুপারিশ থাকে। ভারত যদি কারও বিরুদ্ধে আপত্তি দেয়, তাহলে তিনি নিয়োগ পান না।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের গোলামি করলেও এ দেশের মানুষ ভারতের গোলামি করবে না। ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নাই। তবে আমাদের আপত্তি ভারতের শাসকদের পলিসি, নীতি নিয়ে। তাই দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। আশা করছি, আওয়ামী লীগের নয়, ১৮ কোটি মানুষের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের ভূমিকায় ফিরে আসবে ভারত সরকার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রই এখন ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইনে উত্তাল। ভারতীয় পণ্য বর্জন করে জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজধানীতে মিছিল সমাবেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে। সচেতন মানুষ বলছেন, ভারতের পণ্য কিনলে তা বুলেট হয়ে জনগণের রক্ত ঝরাচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে নয়, আওয়ামী লীগের পক্ষে। জনগণ তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ‘ভারত হটাও’ আন্দোলনের ডাক দিয়ে। নিরস্ত্র মানুষের একটাই ব্রত এখন তারা কষ্টার্জিত পকেটের পয়সায় গণধিকৃত আওয়ামী লীগ সরকারের মদদদাতা ও শক্তির উৎস ভারতের পণ্য কিনবে না। এটা কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বাংলাদেশের অধিকার হারা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। সারাদেশের দেশপ্রেমে শাণিত মানুষের এই ভারতীয় পণ্য বর্জনকে আমরা যৌক্তিক মনে করি। আওয়ামী লীগকে জোরপূর্বক ক্ষমতায় বসে থাকতে সহযোগিতাকারী ভারতীয় পণ্য বর্জন হোক মানুষের প্রতিবাদের হাতিয়ার। ভারতীয় পণ্য বর্জন মানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারকে বর্জন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, ডা. আব্দুল কুদ্দুস, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            