সংগৃহীত
ঐতিহ্য ও কৃষ্টি

নবান্ন উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ১ অগ্রহায়ণ। নবান্ন উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় বাঁশি বাজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা, চলবে রাত পর্যন্ত। পিঠাপুলি, বাহারি পোশাক, রঙিন সজ্জায় বাঁশির মায়াবী ধ্বনি, নাচ, গান আর আবৃত্তিতে অগ্রহায়ণের প্রথম সকালে চারুকলার বকুলতলা মুখর হয়ে উঠেছে।

‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ এই প্রতিপাদ্যে এ বছরও চারুকলায় নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ‘পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে আয়রে ছুটে আয়...’, অগ্রহায়ণ আসলেই এমন আহ্বানে যেন পুরো গ্রাম মেতে ওঠে। কৃষকের মুখে হাসি ফোটে, জীবনে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়।

অগ্রহায়ণের অনুষ্ঠানকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলবে প্রথম ভাগের আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর ২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় ভাগের পরিবেশনা। বিভিন্ন সংগঠন তাদের পরিবেশনা উপস্থাপন করছে।

বাংলা এ মাসটি এলেই নতুন ধানের ঘ্রাণে মেতে ওঠে বাংলার গ্রাম-গ্রামান্তর। নতুন চালের পিঠাপুলীর ধুম আর গানবাজনায় আমন্ত্রণ জানানো হয় সমৃদ্ধিকে। নবান্ন উৎসব বাঙালির হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য। এই উৎসবে সবাই ধর্ম-বর্ণ ভুলে একসঙ্গে আনন্দ করেন। এটি আমাদের সামাজিক বন্ধন আরও মজবুত করে।

‘নবান্ন’ মানে ‘নতুন ভাত’ বা ‘নতুন খাবার’। নতুন ধান কাটার পর সেই ধানের চাল দিয়ে প্রথম রান্না উপলক্ষে নবান্ন উৎসব হয়। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে যখন আমন ধান পাকে, তখনই এই উৎসব পালিত হয়।

কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস মিলে হেমন্ত ঋতু। হেমন্তের প্রথম মাস পার হওয়ার পর ধান কাটার সময় কৃষকের ঘরে আনন্দের ঢল নামে। ধান ঘরে তোলা, পিঠা-পায়েস খাওয়া, আর উৎসবের ধুম লেগে যায়। গ্রাম ভরে ওঠে নতুন আনন্দে।

আগে এসময়টাতে ঢেঁকিতে ধান ভাঙার শব্দে গ্রাম মুখর থাকত। এখন যান্ত্রিক জীবনের প্রভাবে সেই ঢেঁকির শব্দ আর শোনা যায় না। তবে নতুন চাল দিয়ে ভাত, পিঠা আর পায়েসের আনন্দ এখনো দেখা যায়।

রাজধানী ঢাকায় নবান্ন উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। প্রতিবছর পহেলা অগ্রহায়ণ ঢাকায় নানা স্থানে, যেমন রমনার বটমূলে, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে নবান্ন উৎসব আয়োজন করা হয়।

তবে এখন গ্রামে নবান্ন উৎসব খুব কম দেখা যায়। অনেকেই এই ধরনের উৎসব পালন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এর কারণ হতে পারে যান্ত্রিক জীবন, শহরের প্রভাব, আর মানুষের ব্যস্ততা।

কিন্তু নবান্ন ও অন্যান্য গ্রামীণ উৎসব হারিয়ে গেলে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বড় অংশ হারিয়ে যাবে। এগুলো শুধু উৎসব নয়, আমাদের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। এ ছাড়া নিজেদের এই উৎসবগুলো আমাদের সামাজিক সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করে।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদের আরেকটি বাসার খোঁজ, মিলল নগদ টাকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান রিয়াদের আর...

গণভবনই থেকে এসেছিল হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত

জুলাই মাসে ঢাকায় সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হেলিক...

ইউনূস সরকারের নিরাপদ প্রস্থানের সময় ফুরিয়ে আসছে

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সময় ফুরিয়ে আসছে...

যুক্তরাষ্ট্রে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, পাইলট অক্ষত

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় নেভাল এয়ার স্টেশন লেমুরের কাছে মার্কিন নৌ...

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে কানাডা

ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো এবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর...

ইউনূস সরকারের নিরাপদ প্রস্থানের সময় ফুরিয়ে আসছে

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সময় ফুরিয়ে আসছে...

ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ

হরর, অতিপ্রাকৃত, ফ্যান্টাসি ঘরানার সিনেমা নিয়েই মূলত কানাডার ফ্যান্টাজিয়া আন্...

এক সিদ্ধান্তেই বদলে গেল জীবনটা

২০১৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘মাসান’। সমালোচকপ্রিয় ও বহুল প্রশংসিত এ...

ফিরেই দলকে নাটকীয় জয় এনে দিলেন মেসি

এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই পুরোনো চেহারায় দেখা গেল লিওনেল মেসিকে। বাং...

নাঈম এবার অস্ট্রেলিয়া সফরে

বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বাদ দিলে বাংলাদেশ শেষবার অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ খেলেছে ২০০৮ স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা