আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে রোমান শাপোভালেঙ্কোকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) তিনজন সশস্ত্র মুখোশধারী কর্মকর্তা দক্ষিণ ইউক্রেনীয় বন্দর শহর খেরসন-এ তার বাড়িতে অভিযান চালায়।
বাড়িঘরে তল্লাশি শেষে শাপোভালেঙ্কোর ফোনে থাকা বার্তাগুলোও পড়ে দেখে এফএসবির কর্মকর্তারা। তারা মোবাইল ফোনে একটি বার্তা দেখতে পান, যেখানে রুশ সেনাদের ‘অর্কস’ বলে ডাকা হয়েছিল। রাশিয়ান সেনাবাহিনীকে গালি দেওয়ার জন্য ইউক্রেনীয়রা এই শব্দটি ব্যবহার করে। শাপোভালেঙ্কোকে গ্রেপ্তারের জন্য এটিই যথেষ্ট ছিল। হাত ও চোখে বেঁধে তাকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
কয়েকদিন পর শাপোভালেঙ্কোর ওপর নির্যাতন শুরু করা হয়। তার যৌনাঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা হয়। তার পশ্চাৎদেশে কাঁচের বোতল প্রবেশ করিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি তার অণ্ডকোষ কেটে ফেলার হুমকি দেওয়া।
৩৯ বছর বয়সী এই ইউক্রেনীয় বলেন, ‘তাদের যৌনাঙ্গের প্রতি টান আছে বলে মনে হচ্ছে। কখনও কখনও দরজা খুললে তারা বলত: আমরা আমাদের লাঠি বের করতে যাচ্ছি এবং আমরা এখানে সবাইকে ধর্ষণ করতে যাচ্ছি।’
শাপোভালেঙ্কোর মতো যৌন সহিংসতার অভিজ্ঞতা ইউক্রেনীয়দের মধ্যে সাধারণ। বেসামরিক ও সেনাসহ যারা রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে আটক করা হয়েছে, তাদের সবাইকে এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দিদের ওপর রুশ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌন সহিংসতা সম্পর্কে অভিযোগ করে আসছে। বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, দখলকৃত ইউক্রেনে এই নির্যাতনের চর্চা করছে রাশিয়া।
রাশিয়ার বন্দিদশা ফেরত আসা খুব কম ইউক্রেনীয় পুরুষই তাদের ওপর নির্যানতন সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। কিন্তু ইউক্রেনীয় প্রসিকিউটর এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছেন, যৌন নির্যাতনের শিকার পুরুষদের সংখ্যা বেড়েছে। বিষয়গুলো কলঙ্ক ও লজ্জার কারণে তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না।
সংঘাত সম্পর্কিত যৌন সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ইউক্রেনে ৮৫টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫২ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী, একজন কিশোরী এবং একজন কিশোর। জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক কর্মকর্তাদের একটি পৃথক প্রতিবেদনে ৬০ জন ইউক্রেনীয় পুরুষ মুক্তির পর সাক্ষাৎকার দিয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, ৩৯ জন বন্দি থাকা অবস্থায় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিল।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            