আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ‘সামরিক অভিযানে’ ১৯৬ ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে জাতিসংঘ। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) এই দাবি জানান জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার (১ এপ্রিল) গাজার দেইর আল বালাহতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) গাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৭ ত্রাণকর্মী নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়ার, তিন জন যুক্তরাজ্যের, একজন যুক্তরাষ্ট্রের, একজন পোল্যান্ডের ও একজন ফিলিস্তিনের নাগরিক।
ইসরায়েল প্রথমে এ ঘটনার দায় সুকৌশলে এড়িয়ে যেতে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চাপে দখলদার নেতানিয়াহু প্রশাসন দায় স্বীকার করতে বাধ্য হয় ও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়। এমনকি, এ ঘটনায় দায়ী দুই সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্তও করে ইসরায়েলি প্রশাসন।
শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ইসরায়েল তাদের ভুল স্বীকার করেছে। এটা ইতিবাচক হলেও ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধকৌশল ও পদ্ধতির কারণে গাজায় এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। আমরা জানতে চাই, কেন ত্রাণকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে, গাজায় হামলার পাশাপাশি সেখানে ত্রাণ সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় বসবাসরত ২২ লাখ ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্যসংকটে পড়েছে। খাবার-পানির অভাবে উপত্যকাটিতে মানুষের মৃত্যুও শুরু হয়েছে।
ইসরায়েলকে এ ইস্যুতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন আন্তোনিও গুতেরেস, যখন সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়, তখন ক্ষুধা জ্বালা শুরু হয়। বর্তমানে গাজার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি ভয়াবহ ক্ষুধার মুখোমুখি হচ্ছে। এমনকি, খাদ্য ও পানির অভাবে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সহ্য করার মতো নয় এবং চাইলেই এটি এড়ানো সম্ভব। এজন্য ইসরায়েলকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতেই হবে।
গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালান হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। সেদিন তাদের গুলিতে ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। সেই সঙ্গে তারা জিম্মি হিসেবে ২৪২ জনকে গাজায় ধরে নিয়ে যান।
অভূতপূর্ব সেই হামলার পর একই দিন থেকে গাজায় ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহিত হয়েছেন। অন্যদিকে, আহতের সংখ্যা ৭৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল গত কয়েক মাস ধরে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে; কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাতে কর্ণপাত করছেন। কয়েক দিন আগে জাতিসংঘে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলেও, হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নেতানিয়াহু জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তাদের হামলা চলতেই থাকবে। সূত্র: রয়টার্স
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            