আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার পশ্চিম থানা এলাকায় নিজের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মুহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘গত মার্চ মাসে তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে উত্তরার পশ্চিম থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে এই মামলা করেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে এখনো চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’
গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের আট মাসের মাথায় আইনজীবী তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল পুলিশ।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। ওই ট্রাইব্যুনাল গঠনের তিন বছরের মাথায় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রাখেন।
তাকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে ওই মামলা চলার মধ্যেই ২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তুরিনকে।
যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুলের সঙ্গে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তাকে অপসারণ করে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার।
বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ওই সময়কার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন বলেছিলেন, তুরিন আফরোজকে অব্যাহিত দেওয়াটা ‘জরুরি’ হয়ে পড়েছিল।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। সেদিন বিকালে নীলফামারীর জলঢাকায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ব্যক্তিগত কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছিল।
ক্ষমতার পালাবদলের সপ্তাহ দুয়েক পর ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুরিন আফরোজসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হেফাজতের সমাবেশে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            