ফাওয়াদ আলমের পরিসংখ্যান দেখে মনের কষ্ট লাঘব করতে পারেন লিয়াম ডসন। অবশ্য এখন তাঁর কষ্ট নয়, আনন্দের সময়। ইংল্যান্ডের টেস্ট স্কোয়াডে ফিরেছেন তিনি। কিন্তু এই ফেরার আগে দীর্ঘ যে সময় দলের বাইরে ছিলেন, সে বিষয়ে পাকিস্তানি ক্রিকেটারের একটি পরিসংখ্যান দেখে মনের কষ্ট দূর করতে পারেন ডসন।
দীর্ঘ ১০ বছর ২৫৯ দিন পর ২০২০ সালে পাকিস্তানের টেস্ট দলে ফিরেছিলেন ফাওয়াদ। ৩৫ বছর বয়সী ডসন ফিরলেন ৮ বছর পর। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে শোয়েব বশিরের জায়গায় ডসনকে ফিরিয়ে কাল স্কোয়াড ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। লর্ডসে তৃতীয় টেস্টে আঙুল ভেঙে যায় অফ স্পিনার বশিরের। তাঁর জায়গায় বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার ডসনকে ফেরানো হয়েছে টেস্ট দলে। সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে ইংল্যান্ড। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে চতুর্থ টেস্ট শুরু হবে আগামীকাল।
২০১৬ সালে টেস্টে অভিষিক্ত হয়ে এ সংস্করণে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলা ডসন সর্বশেষ খেলেছেন ২০১৭ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে। ২০২১ সাল থেকে ইংল্যান্ডের ঘরোয়ায় বেশ ভালো করছেন ডসন। এ সময় ১২ বার ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট, ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার। ২০২৩ সাল থেকে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে ১২৪ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৫৯.৭৫ গড়ে ৯৫৬ রানও করেছেন। গত পাঁচ মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর সেঞ্চুরি ৯টি।
তিন বছর বাইরে থাকার পর গত জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পান ডসন। ফেরার সেই ম্যাচে ২০ রানে নেন ৪ উইকেট। টেস্ট দলে তাঁর ফেরা নিয়ে গতকাল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ডের তারকা হ্যারি ব্রুক বলেছেন, ‘সে খুব অভিজ্ঞ ও দক্ষ ক্রিকেটার। প্রায় সব জায়গাতেই সবার বিপক্ষে খেলেছে। আশা করি, এ সপ্তাহে তাঁর কাছ থেকে দারুণ পারফরম্যান্স পাব।’
ডসন ৮ বছর টেস্ট দলের বাইরে থাকার এ সময় ইংল্যান্ড এ সংস্করণে ১০২টি ম্যাচ খেলেছে। তবে তাঁর টেস্ট দলে ফেরায় মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, দুটি টেস্ট খেলার মাঝে দলের হয়ে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ মিস করেছেন কোন ক্রিকেটার? তিনিও ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার গ্যারেথ ব্যাটি। ২০০৫ সালের জুনে টেস্ট খেলার পর ১১ বছর ১৩৭ দিন পর ২০১৬ সালে আবারও টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ব্যাটি। তাঁর দলের বাইরে থাকার এ সময়ে ১৪২টি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড।
দুটি টেস্ট খেলার মাঝে সবচেয়ে বেশি সময় বিরতির রেকর্ড জন ট্রাইকোসের। ১৯৭০ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্ট খেলার পর এই সংস্করণে দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় মাঠে নামার সুযোগ পাননি সাবেক এ স্পিনার। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই সিরিজের পরই বর্ণবাদের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। মিসরে জন্ম নেওয়া গ্রিক বংশোদ্ভূত ট্রাইকোস এ সময় জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলা শুরু করেন।
ছোটবেলায় এই জিম্বাবুয়েতেই তাঁর বেড়ে ওঠা এবং দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছেন তিনি। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ বিশ্বকাপেও খেলেন ট্রাইকোস। ১৯৯২ সালে জিম্বাবুয়ে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর সে বছর অক্টোবরে হারারেতে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলেন ট্রাইকোস। সেটি ছিল ২২ বছর ২২২ দিন পর তাঁর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচ।
আমারবাঙলা/জিজি