সংগৃহিত
জাতীয়

আসুন সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক মুক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে সকল বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোনো অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়।

বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা প্রমাণ করেছি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেয়া যায়।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে সামরিক শাসকেরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে কায়েম করে একনায়কতন্ত্র। স্থবির হয়ে পড়ে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের জাতির পিতার নেয়া সব কার্যক্রম।

জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের পরিবর্তে ক্ষমতাসীনরা তাদের নিজেদের ভাগ্য বদলাতে বিভোর হয়ে থাকে। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছরের ইতিহাস এদেশের মানুষের নিপীড়ন আর বঞ্চনার ইতিহাস।

তিনি বলেন, লুটপাট, দুর্নীতি, ইতিহাস বিকৃতি, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মৌল চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর এবং পশ্চাৎপদ দেশের তকমা পড়িয়ে দেয়া হয়।

নিদারুণ দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অকাল মৃত্যু ও শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাব ছিল এদেশের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। সাধারণ মানুষ এসব বঞ্চনাকে ভাগ্যের লিখন হিসেবে মেনে নিতো। তখন মানুষকে বুঝতেই দেয়া হয়নি যে, তাদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কিছু আছে।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করা শুরু করে।

আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুঃস্থ মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, দুঃস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, নিরক্ষরতা দূর করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার বিস্তার, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুসহ ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এই সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন তাদেরও সরকারি সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের ম্যান্ডেট নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে সরকার পরিচালনা করছে। এই ১৫ বছরের অভিযাত্রা একেবারেই কুসমাস্তীর্ণ ছিল না।

প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, মহামারি, যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি দেশি-বিদেশি শক্তির নানা ষড়যন্ত্র আমাদের চলার পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে বার বার। ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডর, কয়েক দফা প্রলয়ঙ্কারী বন্যা উপকূলীয় এবং নিম্নাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ ও বাইরের অভিঘাত মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার, দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সব খাতে আজকে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়।

একসময়ের দারিদ্র্য-জ্বরাক্লিষ্ট বাংলাদেশ আজ সক্ষম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। ২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সব শর্ত পূরণ করেছে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ স্থায়ীভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হবে।

তিনি বলেন, রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ ও পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে।

জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের কষ্ট লাঘবের।

শেখ হাসিনা বলেন, এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তুলি।

এছাড়া একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যেন কেউ করতে না পারে সেজন্য ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ ও প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। সেই সঙ্গে রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রাজধানী ঢাকার কমপক্ষে ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ সুলভমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভমূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলা- এই ৫টি পণ্য বিতরণ করছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর- এই ৬টি পণ্য বিতরণ করছে।

পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষ্যে সারা দেশের ১ কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতিটি পরিবার বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৬ টাকা কমালো সরকার

ভোক্তাপর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নভেম্বর মাসের জন্য...

মোরেলগঞ্জে ভরা মৌসুমে সারের জন্য হাহাকার কৃষকরা

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে য...

মেক্সিকোয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২৩

উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২৩ জ...

নিরাপত্তা সংকটে রেলস্টেশন

দেশের ৫১৫টি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ৫১২টিতেই লাগেজ স্ক্যানার বা স্ক্যানার গেট...

আবারো জামায়াতের আমির হলেন ডা. শফিকুর রহমান

ফের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘আমির’ নির্বাচিত হয়েছেন ডা. শফিকুর...

কুমিল্লায় গাঁজার ব্যাগে মিলল দুই ভারতীয় পিস্তল

মাদকবিরোধী অভিযানে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার যশপুর এলাকায় গাঁজাভর্তি ব্যাগ...

‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’

আজ বাংলা চলচ্চিত্রের মৌসুমির জন্মদিন। ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন । মাঝে...

কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে কোটি টাকার ভারতীয়...

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মা...

ঢাবি শিক্ষিকা মোনামির ছবি বিকৃতির ঘটনায় মামলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শেহরীন আমিন ভুইয়া ওরফে মোনামি ছবি বিকৃত করায় সা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা