সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানায় একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়। সেই মামলায় আসামি করা হয় ১৫ বছর বয়সি কিশোর রমজান মোল্যাকে। মামলার পরই গ্রেফতার করা হয় ওই কিশোরকে। ওই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ভুক্তভোগীর এক প্রতিবেশী নারীকে। তবে ওই নারী মামলার ঘটনা ও সাক্ষী হওয়া নিয়ে কিছুই জানেন না।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ধর্ষণচেষ্টার মামলাটি সাজানো। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ফাঁসাতেই এ মামলা করা হয়েছে। এমনকি মামলার কোনো তদন্ত হয়নি বলেও দাবি পরিবারটির। ঘটনাটি কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুকরা গ্রামের।
মামলার জেরে বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে রমজান। তার বাবা রবিউল মোল্যা জানান, সাড়ে চার শতাংশ জমি নিয়ে প্রতিবেশী আনিছ মোল্যার সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল। গত ৮ জুলাই বিরোধপূর্ণ জমির ওপর দিয়ে ডিশলাইনের তার নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরের দিন আবারও ওই জমির বাঁশ কাটা নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আনিছ মোল্যা তার স্ত্রী তানিয়া বেগমকে দিয়ে পরের দিন গত ১০ জুলাই কাশিয়ানী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, তার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুকন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে রমজান মোল্যা। অভিযোগের দিনই তদন্ত ছাড়াই কিশোর রমজানকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। একইদিন অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয় ও পরের দিন আদালতের মাধ্যমে রমজানকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায় পুলিশ। বর্তমানে ওই শিশু যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
এ মামলার দুই নম্বর সাক্ষী করা হয় বাদীর নিকট প্রতিবেশী বেলি বেগমকে। তিনি বলেন, ‘আমি মামলার ঘটনা ও সাক্ষী সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমার নাম কে দিল তাও জানি না।’
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, ধর্ষণচেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা। তবে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার নির্দেশে এ মামলা হয়েছে।
মামলার বাদী তানিয়া বেগমের ব্যবহৃত নাম্বার ফোন দেওয়া হলে ফোনটি ধরেন তার স্বামী আনিছ মোল্যা। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছি না। এলাকাবাসী যেটা বলে, আপনি সেটা লেখেন। প্রয়োজন হলে থানায় গিয়ে জেনে নেন।’
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে, মিথ্যা হলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই মামলা নেওয়া হয়েছে।’
আমারবাঙলা/জিজি