সংগৃহীত
সারাদেশ

সংগ্রাম করে টিকে আছেন ময়মনসিংহের মৃৎশিল্পীরা

ময়মনসিংহ ব্যুরো

পাকা সড়কের দুপাশে রোদে শুকানো হচ্ছে মাটির তৈরি নানা জিনিস। সড়কের পাশে একটি ঘরে মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব জিনিস। রোদে শুকানো শেষে সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে বিক্রির জন্য উপযোগী করা হয়। যুগ যুগ ধরে পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের এমন কর্মব্যস্ততা।

তবে ক্রমশ কর্মব্যস্ততা কমছে মৃৎশিল্পীদের। মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদাও দিন দিন কমরেছ। তারপরও টিকে আছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার মৃৎশিল্প। আদি পেশা আঁকড়ে জীবন কাটিয়ে যাচ্ছেন এসব পরিবারের সদস্যরা।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় পালপাড়া হলো পুটিজানা ইউনিয়নের শিবগঞ্জ পালপাড়া। এ গ্রামে প্রায় ২০০ পাল পরিবার বসবাস করে। তাদের সবার পেশা মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করা। সম্প্রতি শিবগঞ্জ পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি পাল পরিবারের উঠানে তৈরি হচ্ছে প্রয়োজনমতো জিনিসপত্র। মাটির তৈরি জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত নারীরা। পুরুষেরা করছেন অন্য কাজ। মাটির বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে উঠানে কিংবা পাকা সড়কের পাশে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বাড়িতেই মাটির তৈরি জিনিস পোড়ানোর জন্য রয়েছে চুল্লি। সেখান থেকে মাটির তৈরি জিনিস নামাতেও দেখা গেছে। পুড়ে লাল বর্ণ ধারণ করা মাটির এসব জিনিসের একসময় সর্বত্র চাহিদা থাকলেও দিন দিন এসবের ব্যবহার কমছে। প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের জিনিসপত্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকতে পারছে না মাটির জিনিসপত্র। ফলে অনেকে পেশা পাল্টে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন।

বাড়ির মন্দিরের একপাশে বসে রিনা রানী পাল (৩৮) ও তার শাশুড়ি অবলা রানী পাল (৬০) তৈরি করছিলেন দই রাখার পাত্র। গরম আসায় দইয়ের পাত্রের চাহিদা বেড়েছে। দইয়ের পাত্র তৈরির পর তারা তা পাকা সড়কের পাশে রোদে শুকাতে দিচ্ছিলেন। রিনা বলেন, দুই দশক আগেও বহু ধরনের জিনিস তৈরি হতো। কিন্তু দিন দিন চাহিদা কমছে। গরম এলে দইয়ের পাত্রের চাহিদা বাড়ে মিষ্টির দোকানগুলোতে। সাধারণত, বাড়ির নারীরা এগুলো বানান, পুরুষেরা বাজারে নিয়ে দোকানে দোকানে সরবরাহ করেন।

বিমলা রানী পাল (৬৫) মাটির দলা প্রস্তুত করছিলেন। তিনি বলেন, আগে সংসারের সব কাজে মাটির তৈরি জিনিসের ব্যবহার ছিল। এখন অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ও প্লাস্টিকের জিনিসের ব্যবহার বেড়েছে। এরপরও ঢাকনা, দইয়ের পাতিল, পিঠার হাঁড়িসহ চাহিদা অনুযায়ী অনেক জিনিস তারা তৈরি করেন।

চায়না রানী পাল (৩৫) ও তার স্বামী উত্তম চন্দ্র পালকে (৪২) বাড়ি উঠানে চুল্লি থেকে মাটির তৈরি জিনিসপত্র নামাতে দেখা যায়। উত্তম বলেন, আগে গ্রামে ফেরি করে এগুলো বিক্রি করতাম আমরা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। মাটি কামড়ে এই পেশায় টিকে আছি আমরা।

পুটিজানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. ফারুক হোসেন জানালেন, তার এলাকায় প্রায় ২০০ পাল পরিবার আছে। এ অঞ্চলের বৃহৎ পালপাড়া এটি। কিন্তু দিন দিন মাটির জিনিসের চাহিদা কমায় অনেকে পেশা বদল করছেন। শিল্পটি টিকিয়ে রাখতে সরকার এদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে পারে।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে দ্বিমুখী চিত্রে নগরবাসীর ক্ষোভ

চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে চলছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বিরোধী অভিযান। একদিকে ট্রাফ...

লক্ষ্মীপুর পৌরসভা-  প্রকৌশলীসহ ৩৯ জনকে দুদকে তলব 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বির...

ভিসা প্রতরণার নতুন কৌশল;ফেসবুকে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দেওয়ার নামে প্রতারণা 

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে অনলাইনে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দেওয়ার নামে প্রতা...

যশোরে তরুণদের মধ্যে বাড়ছে এইচআইভি সংক্রমণ

সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে আশঙ্কাজনকভাবে এইচআইভি সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ...

যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ইসরায়েলের হামলা, ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত

যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হাম...

একদিনের ব্যবধানে আবারোও বাড়লো সোনার দাম

দেশের বাজারে এক দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ভরিতে ৮ হাজার ৯০০ টাকা...

ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’

সংরক্ষিত নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘শাপলা কলি&rsq...

কমিটি বাতিলের দাবিতে ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর...

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হামলা

নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।...

বিএনপি বিবাহে রাজি হয়েছে, কাবিননামায় সাইনও করেছে; 'না' বলার অপশন নাই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা