অস্কারজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী ডায়ান কিটন আর নেই। ক্যালিফোর্নিয়ার নিজের বাসায় গতকাল শনিবার (১১ অক্টোবর) শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। খবর বিবিসির।
‘দ্য গডফাদার’ সিরিজের কেই অ্যাডামস-কোরলিওনে চরিত্রে অভিনয় করে ১৯৭০-এর দশকে তিনি প্রথম খ্যাতি পান। এরপর তাঁকে দেখা যায় আরও অনেক আলোচিত সিনেমায়—‘ফাদার অব দ্য ব্রাইড’, ‘ফার্স্ট ওয়াইভস ক্লাব’, আর সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘অ্যানি হল’, যেটির জন্য ১৯৭৮ সালে তিনি পান সেরা অভিনেত্রীর অস্কার।
উডি অ্যালেন পরিচালিত ও অভিনীত ‘অ্যানি হলে’ কিটনের অভিনয় আজও রোমান্টিক কমেডির ইতিহাসে এক মানদণ্ড। এই ছবির জন্যই তিনি জিতে নেন গোল্ডেন গ্লোব ও বাফটা অ্যাওয়ার্ডও।
পুরুষদের পোশাক, চওড়া টুপি আর নির্ভার হাসি—এসব দিয়েই তৈরি হয়েছিল তাঁর নিজস্ব ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। কিটনকে বলা হয় হলিউডের সবচেয়ে প্রভাবশালী স্টাইল আইকনদের একজন।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় কিটন ছিলেন বহুমাত্রিক এক শিল্পী। অভিনয় করেছেন ‘দ্য ফ্যামিলি স্টোন’, ‘বিকজ আই সেইড সো’, ‘অ্যান্ড সো ইট গোজ’, ‘প্লে ইট এগেইন, স্যাম’, ‘স্লিপার’, ‘লাভ অ্যান্ড ডেথ’, ‘ম্যানহাটন’ ইত্যাদি সিনেমায়।
তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু ১৯৭০ সালের রোমান্টিক কমেডি ‘লাভার্স অ্যান্ড আদার স্ট্রেঞ্জার্স’ দিয়ে। সর্বশেষ তাঁকে দেখা গেছে ২০২৪ সালের ছবি ‘সামার ক্যাম্পে’, যেখানে সহ-অভিনয়ে ছিলেন ইউজিন লেভি ও ক্যাথি বেটস।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন দক্ষ পরিচালক। ১৯৮৭ সালে নির্মাণ করেন তথ্যচিত্র ‘হেভেন’, তাঁর ১৯৯৫ সালের চলচ্চিত্র ‘আনস্ট্রাং হিরোস’ কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে নির্বাচিত হয়।
২০০০ সালে কিটন পরিচালনা করেন পারিবারিক ড্রামাধর্মী ছবি ‘হ্যাংগিং আপ’। এতে তিনি নিজেও অভিনয় করেন।
তাঁর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক জানিয়েছেন হলিউডের অনেক তারকা।
‘ফার্স্ট ওয়াইভস ক্লাবের’ সহ-অভিনেত্রী বেট মিডলার ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘অসাধারণ, মেধাবী, একেবারে মৌলিক ধারার অভিনেত্রী ডায়ান কিটন নেই আর। এ খবর আমাকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি ছিলেন হাস্যরসিক, আন্তরিক একজন মানুষ।’
অভিনেতা বেন স্টিলার এক্সে (টুইটার) লিখেছেন, ‘ডায়ান কিটন চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। স্টাইল, বুদ্ধিমত্তা, রসবোধ—সব মিলিয়ে অনন্য এক মানুষ।’
ডায়ান কিটন কখনো বিয়ে করেননি। তবে তিনি দুই সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন—মেয়ে ডেক্সটার ও ছেলে ডিউক। নিজের আত্মজীবনী ‘দেন এগেইনে’(২০১১) কিটন লিখেছিলেন, ‘আমার প্রিয়জনেরা যখন খুশি থাকে, তখনই আমি সবচেয়ে সুখী। এমন ভালোবাসা অন্য কেউ পেতে পারে বলে আমি মনে করি না।’
আমারবাঙলা/এফএইচ