কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভায় বকেয়া বেতন নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সার্ভেয়ারের কিলঘুষিতে শহিদুল ইসলাম (৫৭) নামের এক গাড়িচালক নিহত হয়েছেন—এমন অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে পৌর ভবনের ১১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শহিদুল ইসলাম পৌরসভার মৃত গঞ্জের আলীর ছেলে।
পৌরসভার কর্মচারী ও স্থানীয় কয়েকজনের বরাতে জানা যায়, সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে শহিদুল পৌরসভা ভবনের বিভিন্ন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছিলেন। ১১৫ নম্বর কক্ষটি বন্ধ করতে গেলে সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কিলঘুষি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পৌরসভার অন্য কর্মীরা ফিরোজুলকে ১১৫ নম্বর এবং শহিদুলকে ১০১ নম্বর কক্ষে আটক করে রাখেন। কিছুক্ষণ পর ১০১ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, শহিদুল মেঝেতে পড়ে আছেন।
সকাল ১০টার দিকে তাঁকে উদ্ধার করে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মেয়ে সুবর্ণা অভিযোগ করেন, “পৌরসভা বহুদিন ধরে বেতন দিচ্ছে না। আজ বেতন চাইতে গেলে সার্ভেয়ার আমার বাবাকে মারধর করে ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রাখে। পরে পুলিশ সেখান থেকে বাবার লাশ উদ্ধার করে।” তিনি জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
শহিদুলের ভাগ্নি রূপালী বলেন, “মারামারির খবর শুনে পৌর ভবনের পেছনে গিয়ে দেখি মামা মুখে–দাঁতে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে মেঝেতে পড়ে আছেন।”
ঘটনার পর থেকে সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী পৌরসভায় বিক্ষোভ করেন, ভবনে ভাঙচুর চালান এবং প্রধান ফটক আটকে রেখে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন মিললে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। ঘটনাটি তদন্তাধীন।
আমারবাঙলা/এফএইচ